মালয়েশিয়ায় এক লাখ টাকারও কম খরচে যেভাবে কর্মী হিসেবে যেতে পারবেন

মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগে এক লাখ টাকারও কম খরচ হবে বলে আশা করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। আগামী মাস থেকেই কর্মী যাওয়া শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

মালয়েশিয়া সফর শেষে ঢাকায় ফিরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এই আশার কথা জানান। বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর কুয়ালালামপুরে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে ইমরান আহমদ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশি কর্মীর যাওয়া-আসার টিকিটসহ মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। এখানে কর্মীর খরচ বলতে পাসপোর্ট তৈরি, বিএমইটি ফি, কল্যাণ বোর্ডের সদস্য ফি, মেডিক্যাল ফি ও রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ।

মন্ত্রী বলেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ডাটাবেইস থেকেই কর্মী পাঠানো হবে। আগের মতো কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সিই কর্মী পাঠাতে পারবে। মালয়েশিয়া যেতে দালালদের টাকা না দিতেও তিনি অনুরোধ জানান।

কর্মসংস্থানমন্ত্রী বলেন, আগে সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয় এক লাখ ৬০ হাজার বা এক লাখ ৬৫ হাজার টাকা যা-ই থাকুক না কেন, এখন তা থেকে অনেক কমে আসবে। দুই দেশের এজেন্সি যৌথভাবে কাজ করবে। ব্যয়ের বেশির ভাগ খরচই নিয়োগকর্তা বহন করবেন।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘আগে বিমানভাড়া আমাদের কর্মীরা দিতেন, যার কারণে ওই ব্যয় ছিল। এবার আশা করি, খরচ অনেক অনেক কমে যাবে। আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির চার্জ যা-ই হোক, সেটা আমাদের কর্মীদের ওপর পড়বে। মালয়েশিয়ার অংশেরটা নিয়োগকর্তা দেবেন। সার্ভিস চার্জ নির্ধারণ করা নেই।’

মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়া প্রান্তের খরচের মধ্যে আছে রিক্রুটিং এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার উড়োজাহাজভাড়া, আবাসন ও কর্মে নিয়োগ। নতুন চুক্তি অনুযায়ী কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচও নিয়োগকর্তা বহন করবেন। নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন।

মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্সসংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিনসংক্রান্ত খরচসহ সব ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা বা কম্পানি বহন করবে। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা ও কল্যাণ নিশ্চিত করবেন।

ইমরান আহমদ বলেন, তিন বছর আগে সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই সিন্ডিকেট থাকছে না। আর কর্মী পাঠাতে কোনো ধরনের সিন্ডিকেট কিংবা গ্রুপিং করার সুযোগ থাকবে না।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, শ্রমিকের স্বার্থ সংরক্ষণ করা মূল লক্ষ্য। যাঁদের বৈধ রিক্রুটমেন্ট লাইসেন্স আছে শুধু তাঁরাই কর্মী পাঠাতে পারবেন।